সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে কবি জুয়েল মাজহার ও
কথাসাহিত্যিক আবদুল মান্নান সরকারকে ‘জীবনানন্দ পুরস্কার-২০১৯’ দেওয়া
হয়েছে। দু’জন যথাক্রমে কবিতা ও কথাসাহিত্যে এ পুরস্কার পেয়েছেন। শনিবার
(২৬ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল নগরের রায় রোডে খেয়ালী থিয়েটারের কর্মবীর
আবদুল খালেক খান গণপাঠাগারে জুয়েল মাজহার ও আবদুল মান্নান সরকারের হাতে
পুরস্কারের অর্থমূল্য ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি কথাসাহিত্যিক
সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত দু’জনসহ চার মহীরুহ
সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্মের ওপর বীক্ষণাত্মক প্রবন্ধমালা দিয়ে সাজানো
ছোটকাগজ ‘ধানসিড়ি’র অষ্টম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচনও করা হয়। জুয়েল মাজহার ও
আবদুল মান্নান সরকার ছাড়া বাকি যে দুই সাহিত্যিক এতে স্থান পেয়েছেন, সে
দু’জন হলেন ক্লাসিক সাহিত্যিক হিসেবে কবি আহসান হাবীব ও আন্তর্জাতিক
অঙ্গনের কথাসাহিত্যিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ।প্রধান অতিথি
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের (মাঝে) সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি জুয়েল
মাজহার (বাঁয়ে) ও কথাসাহিত্যিক আবদুল মান্নান সরকার (ডানে)। ছবি:
বাংলানিউজআড্ডা ধানসিড়ির আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বঙ্গবন্ধু
তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক কবি শামীম রেজা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের
সভাপতি অধ্যাপক ড. নিখিলেশ রায়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা তারিকুল আহসান, কবি
দীপঙ্কর চক্রবর্তী, আসমা চৌধুরী, পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগত কবি সন্তোষ সিংহ,
কবি গাজী লতিফ, চঞ্চল বাশার, হিজল জোবায়ের, মিছিল খন্দকার প্রমুখ।
‘ধানসিড়ি’র মোড়ক উন্মোচন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কবি জুয়েল
মাজহার ও কথাসাহিত্যিক আবদুল মান্নান সরকারসহ অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজকবি
জুয়েল মাজহার ১৯৬২ সালে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি বর্তমানে অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক।
তার প্রকাশিত কাব্য- দর্জি ঘরে একরাত, মেগাস্থিনিসের হাসি, দিওয়ানা জিকির
এবং অনুবাদ বই- ‘কবিতার ট্রান্সট্রোমার’ ও ‘দূরের হাওয়া’। কথাসাহিত্যিক
আব্দুল মান্নান সরকারের জন্ম ১৯৫২ সালে পাবনার বেড়া উপজেলায়। পেশা
অধ্যাপনা। তার প্রকাশিত উপন্যাস- ‘পাথার’, ‘যাত্রাকাল’, ‘কৃষ্ণপক্ষ’,
‘নয়াবসত’, ‘পিতিপুরুষ’, ‘আরশিনগর’ ও ‘জনক’ এবং গল্পগ্রন্থ- ‘নিরাকের
কাল’, ‘দুই দিগন্তের যাত্রী’ ও ‘নীল পাথরের বিষ’। পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে
এই দু’জনের নাম গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করে জুরি বোর্ড। বিষয়টি স্বাগত
বক্তব্যে জানান জীবনানন্দ পুরস্কার-২০১৯ কমিটির আহ্বায়ক মুহম্মদ
মুহসিন।স্বরচিত কবিতা পাঠ ও আড্ডায় অতিথিদের একাংশ। ছবি: বাংলানিউজতিনি
বলেন, এই পুরস্কারের রীতি হচ্ছে- ধানসিড়ি ও দূর্বার প্রযোজনায় পাঁচজন কবি
ও পাঁচজন কথাসাহিত্যিকের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেশের বিশিষ্ট ১০
সাহিত্যিক বা সাহিত্য-সমঝদারের কাছে পাঠানো হয়। ওই ১০ জনের নির্বাচনের বা
ভোটের ভিত্তিতে একজন কথাসাহিত্যিক ও একজন কবিকে জীবনানন্দ পুরস্কার
দেওয়ার জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। ২০০৭ সালে দ্বিবার্ষিক এ
পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। এর আগে, সকালে ‘জীবনানন্দ পুরস্কার-২০১৯’
প্রদান অনুষ্ঠানের দুই পর্বের প্রথমার্ধের আয়োজন হয়। ‘কবিতার আসর’
শিরোনামে স্বরচিত কবিতা পাঠ ও আড্ডার ওই আয়োজন শুরু হয় সকাল ১০টার
দিকে। শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। তখন স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন- কবি
জুয়েল মাজহার, কথাসাহিত্যিক আব্দুল মান্নান সরকার, জীবনানন্দ পুরস্কার
২০১৯-এর আহ্বায়ক ও ‘ধানসিড়ি’র সম্পাদক ড. মুহম্মদ মুহসিন, কবি শামীম
রেজা, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি
অধ্যাপক ড. নিখিলেশ রায়, সন্তোষ সিংহ, ‘দূর্বা’ সম্পাদক গাজী লতিফ,
নালন্দালোকের সম্পাদক সৈয়দ সগীর উদ্দিন আহমেদ, কবি আসমা চৌধুরী,
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বরিশালের সমন্বয়ক বাহাউদ্দিন গোলাপ, রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কবি মোস্তফা তারিকুল আহসান, কবি দুলাল
সরকার, জাতীয় কবিতা পরিষদ গোপালগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ
অধিকারী, কবি হিজল জোবায়ের, মিছিল খন্দকার, মাহমুদ মিটুল, সৈয়দ মেহেদী
হাসান, চঞ্চল বাশার প্রমুখ।